আদ্রিতা সারা
বরষার ফুলেরা: ভিজে মাটির রঙিন হাসি!
আকাশ কালো করে মেঘ আসে, ঝিরিঝিরি বৃষ্টি নামে আর চারপাশ ভিজে ওঠে টুপটাপ শব্দে—জানেন তো, এটা কোন ঋতু? হ্যাঁ, ঠিক ধরেছেন, এটা হলো আমাদের প্রিয় বরষা! আর বরষা এলেই যেন প্রকৃতি সেজে ওঠে এক নতুন রূপে। চারদিকে সবুজ আর সবুজ, আর সেই সবুজের মাঝে উঁকি দেয় নানা রঙের সুন্দর সুন্দর ফুল!
ভাবছেন, বৃষ্টির মধ্যে কীভাবে ফুল ফোটে? আসলে, বৃষ্টি আর সূর্যের আলো দুটোই কিন্তু ফুলের বেড়ে ওঠার জন্য খুব জরুরি। বরষার ভেজা মাটি আর মিষ্টি বাতাস পেয়ে ফুলেরা আরও তাজা আর সুন্দর হয়ে ফোটে। চলুন, আমরা বরষার কিছু বন্ধুর সঙ্গে পরিচিত হই:
কদম ফুল: হলুদ বলের মতো!
বরষা মানেই যেন কদম ফুল! গোল গোল, হলুদ রঙের নরম তুলোর মতো দেখতে এই ফুলগুলো গাছে ফোটে থোকায় থোকায়। দূর থেকে দেখলে মনে হয় যেন গাছ ভর্তি ছোট ছোট হলুদ বল। কদম ফুলের মিষ্টি গন্ধে চারপাশ ভরে ওঠে। এই ফুল কিন্তু শুধু দেখতেই সুন্দর নয়, এর একটা মিষ্টি গন্ধও আছে। কদম ফুল দেখলেই কেমন যেন মনটা ভরে যায়, তাই না?
বকুল ফুল: ছোট্ট তারার মেলা!
কদম ফুলের মতো বড় না হলেও, বকুল ফুল কিন্তু খুব মিষ্টি আর সুন্দর। ছোট ছোট সাদা তারার মতো এই ফুলগুলো মাটিতে ঝরে পড়লে মনে হয় যেন সাদা কার্পেট বিছানো! বকুল ফুলের দারুণ একটা গন্ধ আছে, যা অনেকক্ষণ থেকে যায়। বিকেলে যখন বৃষ্টি কমে আসে, তখন বকুল তলার পাশ দিয়ে গেলে মনটা আনন্দে ভরে ওঠে।
কামিনী ফুল: সাদা মেঘের ভেলা!
আর আছে কামিনী ফুল! ছোট্ট ছোট্ট সাদা ফুল, কিন্তু যখন ফোটে তখন পুরো গাছ সাদা হয়ে যায়। রাতের বেলা কামিনী ফুলের সুবাসে চারদিক ভরে ওঠে। দিনের বেলা খুব বেশি চোখে না পড়লেও, রাতের অন্ধকারে এর গন্ধই জানান দেয় তার উপস্থিতির।
আরও কত ফুল!
এছাড়াও বরষায় ফোটে আরও অনেক ফুল! যেমন, দোলনচাঁপা, যার সাদা পাপড়িগুলো বাতাসে দোল খায়। এর গন্ধও খুব মিষ্টি। আর আছে জলজ ফুল যেমন শাপলা! পুকুর আর বিলের জলে ফুটে থাকে সাদা আর লাল শাপলা। ভোরে যখন শাপলা ফোটে, তখন দেখতে কী যে ভালো লাগে!
দেখলেন তো, বরষা শুধু বৃষ্টির ঋতু নয়, এটা ফুলেরও ঋতু! এই সময়টায় প্রকৃতির দিকে একটু খেয়াল রাখলে দেখতে পাবেন কত রঙের, কত গন্ধের ফুল আমাদের চারপাশকে আরও সুন্দর করে তুলেছে। পরের বার যখন বৃষ্টি নামবে, জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে বরষার এই সব সুন্দর ফুল বন্ধুদের খুঁজে বের করবেন তো?