ধ্রুব নিউজ ডেস্ক
সোশ্যাল মিডিয়ার বিষয়বস্তু এতটাই আকর্ষণীয় হয় যে, তা মাথায় গেঁথে যায়। ফলে ফোনে না থাকলেও মনের ভেতর তা ঘুরপাক খায়, সন্তানের প্রতি মনোযোগ কমে যায়।
সন্তানদের সঙ্গে সময় কাটানোর সময় বাবা-মায়েরা ফোন বা সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার থেকে বিরত থাকছেন। কিন্তু সাম্প্রতিক এক গবেষণা বলছে, ফোন হাতে না থাকলেও সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীদের মনোযোগে ফাঁক থেকে যায়। ফলে সন্তানদের সঙ্গে যোগাযোগের পরিমাণও কমে যায়। খবর সিএনএন।
আমেরিকার ইউনিভার্সিটি অব আলাবামার গবেষক লিজ রবিনসনের নেতৃত্বে করা এক গবেষণায় দেখা গেছে, যারা বেশি সময় সোশ্যাল মিডিয়ায় কাটান, তারা ফোন ছাড়া থাকলেও সন্তানের সঙ্গে খেলার সময় স্বাভাবিকের চেয়ে ২৯ শতাংশ কম কথা বলেন।
এই গবেষণায় ২ থেকে ৫ বছর বয়সী ৬৫টি শিশুর সঙ্গে তাদের মায়েদের আচরণ বিশ্লেষণ করা হয়েছে। দেখা গেছে, যারা দিনে গড়ে ১৬৯ মিনিট সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করেন, তারা সন্তানের সঙ্গে কম কথা বলেন। অন্যদিকে যারা দিনে গড়ে ২১ মিনিট সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করেন, তারা সন্তানের সঙ্গে বেশি সময় কথা বলেন ও খেলা করেন। স্ক্রিন ব্যবহার করে ইমেইল বা আবহাওয়া দেখার মতো অন্য যেকোনো কার্যক্রমের সঙ্গে কিন্তু এমন আচরণের কোনো সম্পর্ক পাওয়া যায়নি।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সোশ্যাল মিডিয়ার বিষয়বস্তু এতটাই আকর্ষণীয় হয় যে, তা মাথায় গেঁথে যায়। ফলে ফোনে না থাকলেও মনের ভেতর তা ঘুরপাক খায়, সন্তানের প্রতি মনোযোগ কমে যায়।
গবেষণায় বলা হয়েছে, শিশুর মানসিক ও সামাজিক বিকাশের জন্য বড়দের সঙ্গে কথা বলা খুব গুরুত্বপূর্ণ। শিশুরা ভাষা শেখে, আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে শেখে, মনোযোগ দিতে শেখে — এসবই হয় কথাবার্তার মাধ্যমে। এছাড়া, বড়রা কোথায় তাকায়, কীসে মনোযোগ দেয় — তা থেকেও শিশুরা শেখে।
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, প্রতিদিন কিছুটা সময় একান্তভাবে সন্তানের সঙ্গে কাটানো উচিত। এটা ১৫ মিনিট হলেও যথেষ্ট। সেই সময়টায় অন্য চিন্তা এক পাশে রেখে শুধু শিশুর চোখে চোখ রেখে সময় কাটানো জরুরি। সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারের পরিমাণও কমানো দরকার। দিনে কতবার চেক করছেন, কতক্ষণ কাটাচ্ছেন — তা সচেতনভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এতে শুধু সময় বাঁচে না, মনের ভারও কমে।