মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৫
Ad for sale 100 x 870 Position (1)
Position (1)

ঘুমের ঘোরে হেঁটে চলেন যারা: কারণ, লক্ষণ ও করণীয়

ধ্রুব নিউজ ডেস্ক ধ্রুব নিউজ ডেস্ক
প্রকাশ : শুক্রবার, ১১ জুলাই,২০২৫, ১১:২০ পিএম
ঘুমের ঘোরে হেঁটে চলেন যারা: কারণ, লক্ষণ ও করণীয়

ঘুমের মধ্যে অনেকেই রুমের বাইরে চলে যান, নিজের মনে কথা বলেন, কাঁদেন, বা চিৎকার করেন, অথচ ঘুম ভাঙলে তাদের কিছুই মনে থাকে না। মনোবিজ্ঞানের পরিভাষায় এই অবস্থাকে সমনাবুলিজম বা স্লিপওয়াকিং (Sleepwalking) বলা হয়। সাধারণত ছোটদের মধ্যে বেশি দেখা গেলেও বড়রাও এতে আক্রান্ত হতে পারেন।


স্লিপওয়াকিং কী এবং কীভাবে ঘটে?
যারা স্লিপওয়াকিং করেন, তারা স্বাভাবিকভাবেই বিছানায় ঘুমাতে যান। কিন্তু কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তাদের মধ্যে অস্বাভাবিক আচরণ শুরু হয়। তারা আপন মনে কথা বলতে শুরু করেন, কাঁদতে পারেন বা চিৎকার করতে পারেন, এমনকি বিছানা ছেড়ে উঠে হাঁটাহাঁটিও শুরু করেন। তাদের চোখ খোলা থাকলেও চেহারা থাকে ভাবলেশহীন, যেন তারা অন্য এক ঘোরে আছেন। এই সময় তারা যা করেন বা যেখানে যান, তার সবকিছুই নিজের অজান্তে ঘটে।


স্লিপওয়াকিংয়ের কারণ
স্লিপওয়াকিংয়ের বেশ কিছু সম্ভাব্য কারণ রয়েছে:

·         শারীরিক ক্লান্তি: খুব বেশি পরিশ্রম বা ক্লান্ত দেহে বিছানায় গেলে।

·         মানসিক চাপ: অতিরিক্ত উত্তেজনা, ভয় বা মানসিক অস্থিরতা থাকলে।

·         অনিয়মিত ঘুম: প্রতিদিনের ঘুম অনিয়মিত বা অপর্যাপ্ত হলে।

·         স্লিপ অ্যাপনিয়া: ঘুমের মধ্যে শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ হওয়ার (Sleep Apnea) মতো সমস্যা থাকলে।

·         ওষুধের প্রভাব: কিছু নির্দিষ্ট ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে স্লিপওয়াকিং হতে পারে।

·         বংশগত কারণ: মা-বাবার মধ্যে স্লিপওয়াকিংয়ের ইতিহাস থাকলে সন্তানেরও এর ঝুঁকি বেড়ে যায়।


স্লিপওয়াকিং থামাতে করণীয়
স্লিপওয়াকিং একটি উদ্বেগের বিষয় হলেও, সঠিক সতর্কতা ও যত্নের মাধ্যমে আক্রান্ত ব্যক্তিকে সুস্থ রাখা সম্ভব। এটি কোনো গুরুতর মানসিক সমস্যা নয়, তাই আতঙ্কিত হওয়ার প্রয়োজন নেই।

·         সতর্কতা ও নিরাপত্তা: স্লিপওয়াকিং করা ব্যক্তিকে একা থাকতে দেওয়া ঠিক নয়। কারণ তারা দরজা খুলে বাইরে চলে যেতে পারেন, রেলিং টপকে নিচে পড়ে যেতে পারেন, বা রাস্তায় নেমে দুর্ঘটনার শিকার হতে পারেন।

·         বিছানায় ফিরিয়ে আনা: যদি কাউকে স্লিপওয়াকিং করতে দেখেন, তাহলে তাকে আলতো করে বিছানায় ফিরিয়ে দিন এবং মমতা মিশিয়ে শুইয়ে দিন। তাকে জাগিয়ে তোলার চেষ্টা না করাই ভালো, কারণ এতে তারা বিভ্রান্ত বা আতঙ্কিত হতে পারে।

·         ওষুধের পর্যালোচনা: যদি নির্দিষ্ট কোনো ওষুধের কারণে স্লিপওয়াকিং হচ্ছে বলে মনে হয়, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে সেই ওষুধ পরিবর্তন বা ব্যবহার বন্ধ করা যেতে পারে।

·         স্লিপ অ্যাপনিয়ার চিকিৎসা: গবেষণায় দেখা গেছে, স্লিপ অ্যাপনিয়ার চিকিৎসা করলে অনেকের স্লিপওয়াকিং সমস্যার সমাধান হয়। তাই স্লিপ অ্যাপনিয়ার লক্ষণ থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।

·         নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করা: ঘরে কোনো ধারালো বস্তু যেমন ছুরি, কাঁচি ইত্যাদি হাতের নাগালের বাইরে রাখুন।

·         অভ্যাস পরিবর্তন পদ্ধতি: স্লিপওয়াকিং শুরু হওয়ার ১০-১৫ মিনিট আগে তাকে জাগিয়ে দিন, ৫ মিনিট জাগিয়ে রেখে আবার ঘুম পাড়িয়ে দিন। এভাবে অভ্যাস পরিবর্তনের মাধ্যমে ধীরে ধীরে স্লিপওয়াকিং বন্ধ হতে পারে।

·         লগ বুক রাখা: বাচ্চাদের ক্ষেত্রে মা-বাবা একটি ডায়েরি তৈরি করতে পারেন, যেখানে প্রতিদিন বাচ্চা কখন ঘুমাচ্ছে এবং কখন তার সমস্যা শুরু হচ্ছে, তা লিপিবদ্ধ করা হবে। এতে সমস্যার প্যাটার্ন বুঝতে সুবিধা হবে।

সচেতনতা এবং যত্নবান হলে স্লিপওয়াকিং আক্রান্ত ব্যক্তিকে সুরক্ষিত ও সুস্থ রাখা সম্ভব।

ধ্রুব নিউজের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

💬 Comments

Login | Register
Ad for sale 225 x 270 Position (2)
Position (2)